Adsterra

পুরুষের ভুঁড়ি মানেই বাড়ছে বিপদ, হতে পারে ক্যানসারও !

পুরুষের ভুঁড়ি মানেই বাড়ছে বিপদ, হতে পারে ক্যানসারও, ঢাকা ভয়েস, Dhaka Voice, Trending News, Viral News, Top News, Hot News, bangla news, bangladesh

ভুঁড়ি নিয়ে হাসি ঠাট্টার সম্মুখীন হননি এমন মানুষ কমই আছেন। তবে পেটের এই বাড়তি চর্বি যে কেবল শারীরিক সৌন্দর্য নষ্ট করে তা নয়, স্বাস্থ্যের জন্যও ক্ষতিকর। অনেকেরই গায়ের কোনো অংশে তেমন মেদ না থাকলেও পেট আর কোমর জুড়ে দেখা যায় চর্বির প্রলেপ। এই অবাঞ্ছিত ভুঁড়ি রূপ নষ্ট করার পাশাপাশি নষ্ট করে দেয় পরিশ্রম করার ক্ষমতাও। এমনকি এই ভুঁড়িই হতে পারে ক্যানসারের মতো মারণরোগের কারণ। এমনটাই বলছে সাম্প্রতিক গবেষণা। 

সুইডেনের ‘ন্যাশনাল ক্যানসার ইনস্টিটিউট’-এর জার্নালে প্রকাশিত একটি গবেষণাপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, বিএমআই যেমনই হোক না কেন, ভুঁড়ি যদি প্রতিনিয়ত বাড়তেই থাকে তাহলে বুঝতে হবে বিপদ ঘনিয়ে আসছে। ভুঁড়ি থেকেই কোলন, প্রস্টেট, খাদ্যনালীর ক্যানসারের আশঙ্কা বহুগুণ বেড়ে যায়। 

কেবল পুরুষদের নিয়েই এই গবেষণা করা হয়েছে। গবেষকরা দাবি করেছেন, নারীদের ক্ষেত্রে স্থূলতা নানা রোগের কারণ হতে পারে ঠিকই, কিন্তু পুরুষদের ভুঁড়ি বেশ বিপজ্জনক। এই মেদের স্তরেই শুরু হতে পারে ক্যানসার কোষের অনিয়মিত বিভাজন। কোমরের পরিধি ৪০ ইঞ্চির বেশি হয়ে গেলেই সতর্ক হওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন গবেষকরা। 

৩ লক্ষ ৩৯ হাজারের বেশি পুরুষকে নিয়ে একটি সমীক্ষা চালান গবেষকরা। এতে দেখা যায়, যাদের কোমরের মাপ ৪০ ইঞ্চির বেশি এবং কোমর ও পেটে যথেষ্ট চর্বি জমেছে, তাদের ২৫ শতাংশের ক্যানসারের ঝুঁকি রয়েছে। কিন্তু এর সঙ্গে বিএমআই (বডি মাস ইনডেক্স)-এর কোনো সম্পর্ক নেই। 

বিএমআই হলো ওজনের সঙ্গে উচ্চতার অনুপাত। বিএমআই বেশি মানেই যে ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়বে তা নয়। সমস্যা কেবল ওই ভুঁড়িকে নিয়েই। ধরুন, কোনো পুরুষের উচ্চতা ৬ ফুট, তার ওজনও বেশি, কাজেই তার ওজনের সঙ্গে উচ্চতার অনুপাত বা বিএমআই বেশি হবেই। আবার যার উচ্চতা ৫ ফুট এবং বিএমআই কম, কিন্তু বিশাল একটি ভুঁড়ি রয়েছে— সেক্ষেত্রে কিন্তু ঝুঁকি থাকবেই।



ভুঁড়ি কতটা বিপজ্জনক ?

গবেষকেরা দাবি করেছেন, ভুঁড়ি একাই নানা রোগের কারণ হতে পারে। হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট করা, ইনসুলিনের কার্যক্ষমতা কমে যাওয়া, রক্তে খারাপ কোলেস্টেরল বৃদ্ধি, ট্রাইগ্লিসারাইডের স্তর জমা ইত্যাদি ভুঁড়ির কারণেই হয়। কাজেই তা ক্ষতি করে হার্টেরও। ভুঁড়ির কারণে ‘কার্ডিও ভাসকুলার মর্টালিটি’ বেড়ে যায়। শরীরে প্রদাহজনিত নানা অসুখ দেখা দিতে থাকে। এমনকি বাড়ে ক্যানসারের ঝুঁকিও। 

তলপেটে চর্বির কারণে মূত্রথলির কার্যক্ষমতাও নষ্ট হয়। ফলে প্রস্রাবের বেগ নিয়ন্ত্রণ করা যায় না। ৫০-এর কোঠা পার হলে পুরুষদের প্রস্টেট ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ে, যার একটি কারণ কিন্তু এই ভুঁড়ি। 

আবার পেট-কোমরের মেদ অগ্ন্যাশয়ের ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়িয়ে দিতে পারে। সেই সঙ্গেই পাকস্থলীর ক্যানসার এবং লিভার ক্যানসারের ঝুঁকিও বাড়ে। কেবল তাই নয়, অতিরিক্ত মেদ থাকলে ক্যানসারের চিকিৎসাও খুব জটিল হয়ে পড়ে। 

শরীরে মেদ জমতে থাকলে রক্তে বেড়ে যায় ইনসুলিনের মাত্রা। অতিরিক্ত ইনসুলিন ক্যানসার কোষের বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। ফ্যাট শরীরে হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট করে। মাত্রাতিরিক্ত ইস্ট্রোজেন ও টেস্টোস্টেরন ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়িয়ে তোলে।


ডা. আবিদা সুলতানা, (এমবিবিএস)
জেনারেল প্রাকটিসার, সিটি হেলথ সার্ভিসেস লিঃ এন্ড সিটি হাসপাতাল লিঃ
মেডিসিন, চর্মরোগ, বাত-ব্যাথা, শিশু ও গাইনী রোগ বিশেষজ্ঞ।
লেকচারার, জেড এইচ সিকদার মেডিকেল কলেজ এন্ড হসপিটাল, ঢাকা।

No comments

Powered by Blogger.