অতিরিক্ত সচেতনতা শিশুকে মানসিক চাপে ফেলছে না তো ?
‘সাবধানে থাকে’ বা ‘একদমই ভুল করা যাবে না’ খুব সাধারণ কথা। যা অভিভাবকরা শিশুদের হরহামেশাই বলে থাকেন। অনেক অভিভাবকের কাছে এমন কথা, শিশুর সুরক্ষার জন্য স্বাভাবিক মনে হয়। কিন্তু জানেন কি, অতিরিক্ত সতর্কতা শিশুর মনে উদ্বেগ বাড়িয়ে দিতে পারে? শিশুরা শুধু আমাদের কথা নয়, আমাদের ভয় ও দুশ্চিন্তাও শিখে নেয়।
শিশুদের উদ্বেগ বাড়ার কারণ কী ?
অনেক সময় শিশুরা যেকোনো কাজেই অতিরিক্ত চিন্তা করে। আবার চ্যালেঞ্জ দেখলে পিছিয়ে যায়। অভিভাবকরা না বুঝেই এমন কিছু করেন, যা শিশুর মধ্যে ভয় তৈরি করে। যেমন-
- তিন খান, তিন কন্যা, অভিভাবকত্বের তিন রূপতিন খান, তিন কন্যা, অভিভাবকত্বের তিন রূপ
- অতিরিক্ত সুরক্ষা – শিশুর দক্ষতা গড়ে ওঠার পথে বাধা দেয়।
- চিন্তা-প্রবণ মনোভাব – শিশুদের আত্মবিশ্বাস কমিয়ে দেয়।
- কঠোর নিয়ম – শিশুদের মানসিক চাপে ফেলে।
কোন অভ্যাস শিশুর মানসিক চাপ বাড়ায় ?
অনেক পরিবারে কিছু নিয়ম চালু থাকে, যা শিশুদের মনে অজান্তে ভয় ঢুকিয়ে দেয়। যেমন-
- ‘সর্বদা খারাপ কিছু ঘটার জন্য প্রস্তুত থাকো’, যাতে তার সবসময় ভয় পাওয়ার প্রবণতা তৈরি হয়।
- ‘সমস্যা সৃষ্টি করো না’ ফলে শিশু নিজের অনুভূতি লুকাতে শেখে।
- ‘অন্যরা কী ভাববে?’ যা তার আত্মবিশ্বাস কমিয়ে দেয়।
- ‘তোমার অনুভূতিতে বিশ্বাস করো না’, নিজেকে বোঝা কঠিন হয়ে যায়।
- ‘সবাইকে খুশি রাখো’, নিজের চেয়ে অন্যদের বেশি গুরুত্ব দেওয়া শিখে।
- ‘অর্জনই ভালোবাসা’, ব্যর্থতার ভয় তৈরি হয়।
- ‘দুর্বলতা দেখিও না’, সাহায্য চাইতে ভয় পায়।
- ‘পারফেক্ট হও অথবা কিছু না হও’, নতুন কিছু শেখার ইচ্ছা কমে যায়।
কীভাবে শিশুর উদ্বেগ কমানো যায় ?
- শিশুর অনুভূতি গুরুত্ব দিন।
- উন্মুক্ত ও ইতিবাচক যোগাযোগ করুন।
- তাদের স্বাধীনভাবে সিদ্ধান্ত নিতে দিন।
- ভয় না দেখিয়ে সমস্যা সমাধানের কৌশল শেখান।
- ভুলকে শেখার অংশ হিসেবে গ্রহণ করতে সাহায্য করুন।
শিশুর মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখতে হলে আমাদের আচরণে কিছু পরিবর্তন আনতে হবে। ভালোবাসা আর আত্মবিশ্বাস দিয়ে বড় করলে শিশুরা ভবিষ্যতে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে শিখবে।
No comments