Adsterra

দেশবরেণ্য শিল্পী শোভা খান নিজ ঘরে নিগৃহীত

দেশবরেণ্য শিল্পী শোভা খান নিজ ঘরে নিগৃহীত, ঢাকা ভয়েস, Dhaka Voice, Trending News, Viral News, Top News, Hot News, bangla news, bangladesh news

আঞ্চলিক গানের কণ্ঠ শিল্পী শোভা খান। একসময় চট্টগ্রাম বেতার থেকে পরিবেশিত তার সুরেলা কণ্ঠের আঞ্চলিক গান নোয়াখালী অঞ্চলে তথা সারা দেশে ভীষণ জনপ্রিয়তা অর্জন করে। পরবর্তীতে ঢাকা বেতারে নিয়মিত শিল্পী হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন। ঢাকা বেতার থেকে শিল্পীর কণ্ঠে বিভিন্ন ধরণের গান পরিবেশিত হলে শ্রোতাদের হৃদয়ে ভীষণ আলোড়িত করে। প্রতিভাবান এ শিল্পীর কণ্ঠের মাধুর্যে বিমুগ্ধ হয়ে বিভিন্ন পর্যায়ের শ্রোতারা তখন তাকে বাংলার মান্না দে বলে আখ্যায়িত করেন। 

শোভা খানের জন্ম ১৯৪৫ সালে নোয়াখালী জেলার হাতিয়া উপজেলার বুড়িরচর ইউনিয়নের সৈয়দ মিয়া খান সাহেব বংশের এক বনেদী পরিবারে। ছোটবেলায় আগ্রহের বশে তিনি গান গাওয়া শুরু করেন। পরে চট্টগ্রাম বেতারে গানের শিল্পী হিসেবে কাজ শুরু করেন। সে সময়ে হাতিয়া দ্বীপে ও জেলা সদরে শোভা খানের দারুণ জনপ্রিয়তা ছিল। তার আঞ্চলিক গানের মধ্যে ‘হাসুর মা গেছ কোডাই বরির সাটটা দাওনা চাই, ঘরের হিছে খালের মধ্যে কৈ মাছে হোডায়’ গানটি হাটে মাঠে সকলের মাঝে বেশ জনপ্রিয়তা অর্জন করে। তার নিজেরই গান রয়েছে প্রায় পাঁচ শতাধিক। 

সময়ের কালস্রোতে বয়সের ভারে ন্যুব্জ শোভা খান আজ অনেকের কাছে অপরিচিত হয়ে গেছেন। প্রভাবশালী সঙ্গীত ব্যক্তিত্বের সুললিত কণ্ঠে এখন আর গান বাজে না। আধুনিক প্রযুক্তি মানুষের মাঝে বেশি প্রভাবিত হওয়ায় মাটি ও মানুষের অনুভূতি সম্পন্ন গান আর রচিত হয় না বলেই অনেকটা হারিয়ে যাচ্ছে আঞ্চলিক গানও। ফলে দিন দিন শিল্পীর কদরও কমতে থাকে। এদিকে শিল্পীর কিছু নেশা যেমন ধূমপান পরিবারের কাছে পছন্দ নয়। ফলে নিজের ঘরে শোভা খান অনেকটা অপাংক্তেয়। অগত্যায় শিল্পী শোভা খানকে অন্যের ঘরে অবস্থান করতে হচ্ছে। জীবন সায়াহ্নে শিল্পী শোভা এখন একাকী জীবন যাপন করছেন।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, হাতিয়া পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ডে শোভা খানের আধুনিক ও রুচিসম্মত ঘরবাড়ী থাকলেও তার কিছু বদ অভ্যাসের কারণে তিনি ঘরে থাকতে পারছেন না। তার স্ত্রী পুত্র কন্যারাও শিল্পী শোভা খানের এই অভ্যাসগত আচরণের কারণে তাকে ঘরে রাখতে অনীহা প্রকাশ করেন। বাধ্য হয়েই তিনি তার ছোট ভাইয়ের ঘরে অবস্থান করছেন বলে তিনি জানান। তার সন্তানরা সামাজিক ও অর্থনৈতিকভাবে প্রতিষ্ঠিত হলেও সেখানে পিতার কোনো সমাদর হচ্ছে না। এমনকি বাবার প্রতি যে সন্তানের দায়িত্ব ও কর্তব্য আছে সেটাও আজ এই শিল্পীর কপালে জুটছে না।

স্থানীয়রা জানান, এই শিল্পী শোভা খান একসময় নামাজ-কালাম আদায় করত না। এখন আজান হলেই মসজিদে ছুটে যান। অনেক বয়স হলেও তিনি বাই-সাইকেল চালিয়ে বাজার গিয়ে নিজের সদায়পাতি নিজেই করেন। আবার সাইকেলে করে তিনি আত্মীয় স্বজনদের বাড়ি গিয়ে দেখে আসেন। তবে শেষ বয়সে এসে পরিবার থেকে বাইরে এসে থাকছেন এটা সমাজের অনেকেই ভালো চোখে দেখছেন না।

২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানে বীর শহিদ ও অকুতোভয় আন্দোলনকারীদের স্মরণে ও সম্মানে আন্দোলনের প্রেক্ষাপট নিয়ে শাহরিয়ার সোহাগ এর নতুন উপন্যাস বাংলা বসন্ত। অর্ডার করতে ক্লিক করুন

শিল্পী শোভা খানের মন্তব্য জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি এখন গান করা ছেড়ে দিয়েছি। মৃত্যুর ভয় চলে এসেছে। প্রায় ১০ বছর ধরে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ মসজিদে গিয়ে পড়ি। ব্যক্তিগত বদ-অভ্যাসের কারণে পরিবারের লোকজনের কাছে আমার গুরুত্ব এখন আর নাই। তারা তাদের মতো আছে আমার কোন খোঁজ খবর নেয় না, তাই ছোট ভাইয়ের ঘরে আমার মতো করে আছি।

No comments

Powered by Blogger.