Adsterra

আপন ভাইকে হাদিয়া বলে জাকাত দেওয়া যাবে ?

আপন ভাইকে হাদিয়া বলে জাকাত দেওয়া যাবে, ঢাকা ভয়েস, Dhaka Voice, Trending News, Viral News, Top News, Hot News, bangla news, bangladesh

জাকাত ফরজ ইবাদত এবং ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ। পবিত্র কোরআনের বিভিন্ন আয়াতে নামাজের সাথেই জাকাতের আলোচনা এসেছে। এক আয়াতে আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, ‘নিশ্চয়ই যারা ঈমান এনেছে, সৎকাজ করেছে, সালাত প্রতিষ্ঠা করেছে এবং জাকাত দিয়েছে, তাদের প্রতিদান রয়েছে তাদের রবের নিকট। আর তাদের কোনো ভয় নেই এবং তারা চিন্তিতও হবে না।’ (সুরা বাকারা: ২৭৭)


ভাইয়ের আর্থিক অবস্থা খারাপ হলে বা জাকাতের উপযুক্ত হলে তাকে জাকাতের টাকা দেওয়া জায়েজ আছে। নিজের ভাইকে জাকাত বলে টাকা দিতে লজ্জা লাগলে বা ভাইয়ের লজ্জা পাবার সম্ভাবনা থাকলে হাদিয়ে বলে জাকাতের টাকা দিতে পারবেন। এতে আপনার জাকাত আদায় হয়ে যাবে। (ফতোয়ায়ে সিরাজিয়া, পৃ. ২৮; ফাতহুল কাদির: ২/২০৯; ফতোয়ায়ে বাজজাজিয়া: ৪/৮৬; আলবাহরুর রায়েক: ২/২১২; মাজমাউল আনহুর: ১/২৯০)


ইসলামি শরিয়তে ভাই, বোন, চাচা, ফুফুসহ এজাতীয় সব দরিদ্র আত্মীয়-স্বজনকে জাকাত দেওয়া অন্য কাউকে দেওয়ার চেয়ে উত্তম। কেননা এতে সদকা ও আত্মীয়তার হক একসঙ্গে আদায় হয়। এর দলিল হচ্ছে, রাসুলুল্লাহ বলেছেন— الصَّدَقَةَ في الْمِسْكِينِ صَدَقَةٌ وفي ذِي الرَّحِمِ صَدَقَةٌ وَصِلَةٌ অর্থ: মিসকিনকে জাকাত দেওয়া সদকা; আর আত্মীয়কে দেওয়া সদকা ও আত্মীয়তার হক আদায়।’ (মুসনাদে আহমদ: ১৫৭৯৪ সুনানে নাসায়ি: ২৫৮২)


তবে মা-বাবা এবং সন্তানদের জাকাত দেওয়া যাবে না। এমনকি দাদা, নানা, পরদাদা, পরনানা এভাবে মা-বাবার বংশীয় যতই উপরের দিকে যাক এবং সন্তানের বংশীয় স্তর যত নিম্নে যাকনা কেন (যেমন— পৌত্র, প্রপৌত্র) এরা গরিব হলেও এদের জাকাত দেওয়া যাবে না; বরং সামর্থ্য থাকলে তাদের খরচ চালানো কর্তব্য; যদি খরচ চালানোর মতো তাদের অন্যকেউ না থাকে।

২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানে বীর শহিদ ও অকুতোভয় আন্দোলনকারীদের স্মরণে ও সম্মানে আন্দোলনের প্রেক্ষাপট নিয়ে শাহরিয়ার সোহাগ এর নতুন উপন্যাস বাংলা বসন্ত। অর্ডার করতে ক্লিক করুন

মনে রাখতে হবে, জাকাত দেয়ার ফলে সম্পদ পবিত্র হয়। এতে সম্পদ কমে না বরং তাতে বরকত হয়। তাই জাকাত আদায়ে অলসতা বা কৃপতণতা করার কোনো সুযোগ নেই। ক্ষুধামুক্ত সমাজ বিনির্মাণে সুরা তাওবার ৬০ নং আয়াতে নির্দেশিত আট শ্রেণির ব্যক্তিকে তা প্রদান করা জরুরি। সেই ৮ খাত হলো-


১. ফকির। বাংলায় তাদেরকে গরিব বলা হয়।

২. মিসকিন। যাদের আর্থিক অবস্থা গরিবদের চেয়েও খারাপ।

৩. আমেল। জাকাতের কাজে নিযুক্ত ব্যক্তি।

৪. মন জয় করার জন্য। ইসলামের বিরোধিতা বন্ধ করা বা ইসলামের সহায়তার জন্য কারও মন জয় করার প্রয়োজন হলে তাকে জাকাত দেওয়া যাবে। ইসলামের শুরুর দিকে এর প্রয়োজনীয়তা ছিল। বর্তমানে এই খাতের খুব একটা প্রয়োজন নেই। তবে নও-মুসলিমদের সমস্যা দূর করার জন্য জাকাত তহবিল থেকে অর্থ ব্যয় করা যাবে।

৫. দাসমুক্তি। তথা দাসত্ব শৃঙ্খলে আবদ্ধ লোক এবং ইসলামের জন্য বন্দিদের মুক্ত করাতে তাদের জন্য জাকাতের অর্থ দেওয়া যাবে।

৬. ঋণগ্রস্তদের ঋণ পরিশোধ। ঋণভারে জর্জরিত লোকেরা মানসিকভাবে সর্বদাই ক্লিষ্ট থাকে এবং কখনও কখনও জীবন সম্পর্কে হতাশ হয়ে পড়ে। তাদের ঋণমুক্তির জন্য জাকাতের টাকা দেওয়া যাবে।

৭. আল্লাহর পথে ব্যয়। কোরআনের ভাষায় এ খাতের নাম বলা হয়েছে ‘ফি সাবিলিল্লাহ’, যার অর্থ হচ্ছে আল্লাহর পথে। আল্লাহর পথে কথাটি খুব ব্যাপক হলেও অধিকাংশ আলেমের মতে, এখানে মুজাহিদদেরকেই বোঝানো হয়েছে। 

৮. মুসাফির। মুসাফির বা প্রবাসী লোকের বাড়িতে যত ধন-সম্পত্তিই থাকুক না কেন, পথে বা প্রবাসে সে যদি অভাবগ্রস্ত হয়ে পড়ে তাহলে তাকে জাকাত তহবিল হতে প্রয়োজনীয় সাহায্য দেওয়া যাবে।


যে সম্পদের ওপর জাকাত ফরজ, তার ৪০ ভাগের একভাগ (২.৫০%) জাকাত দেওয়া ফরজ। সম্পদের মূল্য নির্ধারণ করে শতকরা আড়াই টাকা, হাজারে ২৫ টাকা বা লাখে আড়াই হাজার টাকা হারে নগদ অর্থ কিংবা ওই পরিমাণ টাকার কাপড়চোপড় অথবা অন্য কোনো প্রয়োজনীয় সামগ্রী কিনে দিলেও জাকাত আদায় হবে (আবু দাউদ: ১৫৭২; সুনানে তিরমিজি: ৬২৩)


No comments

Powered by Blogger.