Adsterra

শীর্ষ সন্ত্রাসী সাজ্জাদ ৭ দিনের রিমান্ডে

শীর্ষ সন্ত্রাসী সাজ্জাদ ৭ দিনের রিমান্ডে, ঢাকা ভয়েস, Dhaka Voice, Trending News, Viral News, Top News, Hot News, bangla news, bangladesh news

আলোচিত শীর্ষ সন্ত্রাসী সাজ্জাদ হোসেন ওরফে ছোট সাজ্জাদের সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। গতকাল রবিবার বিকালে চট্টগ্রাম মহানগর হাকিম আবু বক্কর ছিদ্দিকের আদালত এ আদেশ দেন। শনিবার রাতে রাজধানী ঢাকার বসুন্ধরা শপিং কমপ্লেক্স থেকে চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের (সিএমপি) একটি দল তাকে গ্রেপ্তার করে। এরপর তাকে চট্টগ্রামে আনা হয়। ছোট সাজ্জাদের বিরুদ্ধে চট্টগ্রাম মহানগর ও জেলার বিভিন্ন থানায় হত্যা, অস্ত্র, চাঁদাবাজিসহ মোট ১৫টি মামলা আছে।


এদিকে সাজ্জাদ গ্রেপ্তারের পর গতকাল তার স্ত্রী ফেসবুক লাইভে এসে হুঙ্কার দিয়ে জানান, কাঁড়ি কাঁড়ি টাকার বান্ডিল ছেড়ে সাজ্জাদকে জামিনে বের করে আনবেন। এ সময় তিনি হুমকিও দেন। ইতোমধ্যে তার এ বক্তব্য সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে গেছে।


সিএমপির অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (প্রসিকিউশন) মফিজ উদ্দিন বলেন, শীর্ষ সন্ত্রাসী সাজ্জাদ হোসেনকে নগরীর চান্দগাঁও থানার তাহসিন হত্যা মামলায় আদালতে হাজির করে ১৪ দিনের রিমান্ড আবেদন করে পুলিশ। শুনানি শেষে আদালত সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।


চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশ কমিশনার হাসিব আজিজ গতকাল দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ছোট সাজ্জাদের বিরুদ্ধে চট্টগ্রামের বিভিন্ন থানায় ১৫টি মামলা আছে। তিনি পলাতক শীর্ষ সন্ত্রাসী সাজ্জাদ আলীর সেকেন্ড ইন কমান্ড হিসেবে সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালাতেন। ছোট সাজ্জাদ দুর্ধর্ষ এক সন্ত্রাসী। তিনি রাউজান, রাঙ্গুনিয়া, পাঁচলাইশ ও চান্দগাঁও এলাকায় ত্রাস সৃষ্টিকারী আসামি। বায়েজিদ এলাকায় ডাবল মার্ডার মামলারও আসামি। তিনি বলেন, পুলিশ এর আগে বায়েজিদ এলাকায় তাকে ধরার চেষ্টা করে। তখন পাঁচতলা একটি ভবন থেকে লাফ দিয়ে পালিয়ে যায় সে।

২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানে বীর শহিদ ও অকুতোভয় আন্দোলনকারীদের স্মরণে ও সম্মানে আন্দোলনের প্রেক্ষাপট নিয়ে শাহরিয়ার সোহাগ এর নতুন উপন্যাস বাংলা বসন্ত। অর্ডার করতে ক্লিক করুন

যেভাবে ধরা পড়লেন সাজ্জাদ

পুলিশের তৎপরতার মুখে চট্টগ্রাম ছাড়েন ছোট সাজ্জাদ। গোপন সূত্রে নগর পুলিশের কর্মকর্তাদের কাছে খবর আসে সাজ্জাদ ঢাকায় সস্ত্রীক বাসা ভাড়া নিয়েছেন। চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (উত্তর) মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আমাদের সময়কে বলেন, এর মধ্যে আমরা খবর পাই সাজ্জাদ সস্ত্রীক পান্থপথে বসুন্ধরা মার্কেটে কেনাকাটা করতে আসবেন। আমরা দ্রুত প্রস্তুতি নিয়ে চট্টগ্রাম থেকে রওনা দিই। নির্দিষ্ট সময়ে তাকে পেয়েও যাই। প্রথমে সাদা পোশাকে তাকে আটক করি। পরে তেজগাঁও থানার সহায়তায় গ্রেপ্তার করে তাকে নিয়ে আসি। সাজ্জাদের স্ত্রীর নামে কোনো মামলা নেই। তাই পুলিশ তাকে ধরেনি।


সাজ্জাদ হোসেন ওরফে ছোট সাজ্জাদের বাড়ি চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলায়। ২০২৪ সালের ১৭ জুলাই চান্দগাঁও থানা-পুলিশ অস্ত্রসহ ছোট সাজ্জাদকে গ্রেপ্তার করে। এক মাস পর জামিনে বেরিয়ে আসেন। ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর সাজ্জাদ বেপরোয়া হয়ে ওঠেন।


২০২৪ সালের ২১ অক্টোবর নগরীর চান্দগাঁও অদুরপাড়া এলাকায় দোকানে বসে চা পান করার সময় তাহসিন নামের এক যুবককে গুলি করে হত্যা করেন সাজ্জাদ। ১৮ সেপ্টেম্বর নগরীর বায়েজিদ বোস্তামি থানার কালারপোল এলাকায় একটি নির্মাণাধীন ভবনে চাঁদা না পেয়ে গুলি করেন। ৫ ডিসেম্বর নগরীর অক্সিজেন এলাকায় সাজ্জাদকে পুলিশ ধরতে গেলে গুলি ছুড়তে ছুড়তে পালিয়ে যান তিনি।


গত ২৮ জানুয়ারি নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে লাইভে এসে বায়েজিদ বোস্তামি থানার ওসি আরিফকে প্রকাশ্যে ন্যাংটা করে পেটানোর হুমকি দেন ছোট সাজ্জাদ।


সাজ্জাদের স্ত্রীর হুঙ্কার ছোট সাজ্জাদের গ্রেপ্তার হওয়া নিয়ে গতকাল রবিবার দুপুরের দিকে নিজ ফেসবুক আইডি থেকে লাইভে আসেন সাজ্জাদের স্ত্রী শারমিন আক্তার তামান্না। হাসিমুখে তিনি বলেন, হ্যাঁ, আমার জামাই গতকাল অ্যারেস্ট হয়েছে, এটা নিয়ে এত হইচই উল্লাসের কিছু নেই। মামলা যখন আছে অ্যারেস্ট হবেই। এগুলো নিয়ে এত টেনশন, দুঃখ প্রকাশ, কান্নাকাটি করার কিছু নেই। আপনারা ভাবছেন আমার জামাই অ্যারেস্ট হয়েছে আর কোনো দিন বের হবে না। ওদের জন্য এক বালতি সমবেদনা।


এরপর ব্যঙ্গাত্মক শারীরিক অঙ্গিভঙ্গি করে তামান্না বলেন, আমরা কাঁড়ি কাঁড়ি টাকার বান্ডিল ছেড়ে আমার জামাইকে নিয়ে আসব। আমার জামাই বীরের বেশে চলে আসবে। যারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে, তাদের ছাড় দেওয়া হবে না। মাথায় রাইখেন। এতদিন আমরা পলাতক ছিলাম, এখন তোমাদের পলাতক থাকার পালা। এখন আমার জামাই আইনি প্রক্রিয়া শেষ করে আমার কাছে আসবে; তখন খেলা শুরু হবে। খেলা মাত্র শুরু করছ তোমরা। শেষ করব আমরা। যারা আমার জামাই সাজ্জাদের সাপোর্টার আছ, তারা আমার জামাইয়ের জন্য দোয়া করবা, যাতে ১০-১২ দিনের মধ্যে জামিন করিয়ে ফেলতে পারি। ঠিক আছে। ধন্যবাদ।


লাইভের পর ভিডিওটি সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে দ্রুত ভাইরাল হয়। এরপর সাজ্জাদের স্ত্রী শারমিন আক্তার তার আইডি ডিঅ্যাকটিভ করে দেন।

No comments

Powered by Blogger.