Adsterra

রোগীর সেবা করার সওয়াব

 

রোগীর সেবা করার সওয়াব, ঢাকা ভয়েস, Dhaka Voice, Trending News, Viral News, Top News, Hot News, bangla news, bangladesh new

রোগীর খোঁজ-খবর রাখা, সেবা-যত্ন করা এবং সান্ত্বনা দেওয়া ইবাদততুল্য কাজ। এটি রাসুল (সা.)-এর একটি মর্যাদাপূর্ণ সুন্নত। কোনো কোনো ইসলামি আইনজ্ঞ এটাকে ওয়াজিবও বলেছেন। রোগীর সেবা প্রদানের মাধ্যমে সেবাকারীর ইমান বৃদ্ধি পায়। বৃদ্ধি পায় সমাজের সম্প্রীতি।

রোগীর সেবা করা এবং খোঁজ-খবর নেওয়া শুধু সামাজিক দায়বদ্ধতা নয়; বরং এটি এক মুসলমানের ওপর অপর মুসলমানের দ্বীনি অধিকার। কোনো অসুস্থ ব্যক্তির প্রতি সমবেদনা, সহানুভূতি ও সহযোগিতা থেকে বিরত থাকা আল্লাহ থেকে বিরত থাকার শামিল। হাদিসে এসেছে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘কিয়ামতের দিন আল্লাহ বলবেন, হে আদম সন্তান! আমি অসুস্থ ছিলাম, তুমি আমাকে সেবা করোনি। বান্দা বলবে, হে প্রভু! আপনি তো সব সৃষ্টির প্রতিপালক, আমি কীভাবে আপনার সেবা করতাম? আল্লাহ বলবেন, আমার অমুক বান্দা অসুস্থ হয়েছিল, তুমি তার সেবা করোনি, তুমি যদি তার সেবা করতে তাহলে সেখানে আমাকে পেতে!’ (সহিহ মুসলিম)। অন্যত্র রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘এক মুসলমানের ওপর অপর মুসলমানের ৬টি হক রয়েছে। তার মধ্যে একটি হলো, কোনো মুসলমান যখন অসুস্থ হয়ে যাবে তখন তার সেবা করা।’ (সহিহ মুসলিম) অসুস্থ ব্যক্তির খোঁজ-খবর নেওয়া বা তাকে দেখতে যাওয়া বা তার কোনো সহযোগিতা করা অনেক ফজিলতপূর্ণ কাজ। হাদিসে এসেছে, হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যখন কোনো বান্দা তার অসুস্থ মুসলিম ভাইক দেখতে যায়, তখন একজন ফেরেশতা আকাশ থেকে উচ্চ স্বরে চিৎকার করে বলেন, ‘তুমি ভালো থাকো, তোমার চলাফেরা ভালো ছিল, তুমি বেহেশতে ঠিকানা করে নিয়েছ।’ (তিরমিজি) সুতরাং যাবতীয় রোগ-ব্যাধিতে আক্রান্ত অন্য মুসলিম ভাইয়ের সেবায় নিজেদের সম্পৃক্ততা হবে কল্যাণের কাজ।

২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানে বীর শহিদ ও অকুতোভয় আন্দোলনকারীদের স্মরণে ও সম্মানে আন্দোলনের প্রেক্ষাপট নিয়ে শাহরিয়ার সোহাগ এর নতুন উপন্যাস বাংলা বসন্ত। অর্ডার করতে ক্লিক করুন

অসুস্থ মুমিন মুসলমান ব্যক্তির জন্য দোয়া করাও কল্যাণকর। হাদিসে অসুস্থ ব্যক্তির জন্য একাধিক দোয়া রয়েছে। হজরত ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, ‘রাসলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন কোনো অসুস্থ ব্যক্তিকে দেখতে যেতেন তখন তার শিয়রে বসতেন তারপর সাতবার, উচ্চারণ করতেন, ‘আসআলুল্লাহাল আজিমা রাব্বাল আরশিল আজিমি আই-ইয়াশফিয়াকা।’ অর্থ আমি মহান আরশের মালিক আল্লাহর কাছে তোমার সুস্থতার জন্য প্রার্থনা করছি। প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যদি তার মৃত্যু নির্ধারিত হয়ে না থাকে তবে সে অবশ্যই সুস্থ হয়ে যাবে।’ (মিশকাত) তাই রোগীর কাছে গিয়ে তার কুশলাদি জিজ্ঞাসা করা, তার জন্য সুস্থতার দোয়া করা উচিত। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন অসুস্থ ব্যক্তির কাছে পৌঁছতেন তখন জিজ্ঞাসা করতেন, তোমার অবস্থা কেমন? অতঃপর সান্ত্বনা দিয়ে বলতেন ‘লা বাসা তুহুরা ইনশাআল্লাহ’। অর্থ ভয়ের কোনো কারণ নেই, আল্লাহর ইচ্ছায় সুস্থ হয়ে যাবে।

রোগীর কষ্ট লাঘবে দোয়া, ‘আল্লাহুম্মা আজবিবিল বাসা রাব্বান্নাসি ইশফিহি ওয়া আনতাশ শাফি লা শিফাআ ইল্লা শিফাউকা লা ইয়ুগাদিরু সুক্বমা।’ অর্থ হে আল্লাহ! এ কষ্টকে দূর করে দাও। হে মানুষের প্রভু! তাকে সুস্থতা দান করো। তুমিই সুস্থতা দানকারী। তুমি ছাড়া আর কারও কাছে সুস্থতার আশা নেই। এমন সুস্থতা দান করো যে, রোগের নাম নিশানাও না থাকে। (সহিহ মুসলিম)

রোগীর মনোবল বাড়াতে বেশি বেশি খোঁজ-খবর নেওয়াসহ মানসিকভাবে তাদের আশ্বস্ত করা সবার জন্য জরুরি। আর হাদিসে শেখানো দোয়াগুলোর মাধ্যমে তাদের সুস্থতা কামনা করা। আল্লাহতায়ালা মুসলিম উম্মাহকে হাদিসের নির্দেশনা অনুযায়ী রোগীর সেবা ও তাদের জন্য দোয়া করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

No comments

Powered by Blogger.