Adsterra

বাবল টি, তাইওয়ান থেকে বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয়তার গল্প

বাবল টি, তাইওয়ান থেকে বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয়তার গল্প, ঢাকা ভয়েস, Dhaka Voice, Trending News, Viral News, Top News, Hot News, bangla news, bangladesh new

জনপ্রিয় পানীয়ের তালিকায় চা, কফি, কোল্ড ড্রিংকের পাশাপাশি এক নতুন নাম যোগ হয়েছে—বাবল টি। এটি বোবা টি বা ব্ল্যাক পার্ল টি নামেও পরিচিত। বিশেষ কিছু ক্যাফে ও দোকানে পাওয়া যায় এই চা জাতীয় ঠান্ডা পানীয়, যা তরুণ প্রজন্মের মধ্যে দারুণ জনপ্রিয়। তবে কীভাবে তাইওয়ানের অলিগলির এই পানীয় বিশ্বজুড়ে জনপ্রিয় হয়ে উঠল? চলুন, জেনে নেওয়া যাক।

তাইওয়ানে রাস্তার স্ট্রিটফুডের দোকানগুলোর মাঝে বাবল টির দোকান চোখে পড়ার মতো। গভীর রাত পর্যন্ত এসব দোকান মানুষের আনাগোনায় মুখরিত থাকে। বিশ্বজয়ের পথে এই পানীয়ের যাত্রা শুরু হয়েছিল আশির দশকে।

১৯৮৬ সালে টু সং নামের এক তাইওয়ানীয় শিল্পী ও উদ্যোক্তা রেস্টুরেন্ট ব্যবসা শুরু করেন। তবে সে ব্যবসায় তিনি ৪০ লাখ টাকা লোকসানের মুখে পড়েন। এরপর তিনি নতুনভাবে চায়ের দোকান দেওয়ার চিন্তা করেন, তবে চিরাচরিত কিছু না করে নতুনত্ব আনতে চাইলেন। তিনি চায়ের সঙ্গে যোগ করলেন ট্যাপিওকা পার্ল (এক ধরনের সাগুদানা জাতীয় খাদ্য) ও বরফ। এই অভিনব সংযোজন দ্রুত জনপ্রিয় হয়ে ওঠে।

কিন্তু সমস্যার সৃষ্টি হলো, সাধারণ স্ট্র দিয়ে এই পানীয় পান করা সম্ভব ছিল না, কারণ এতে থাকা ট্যাপিওকা পার্ল চিবিয়ে খেতে হয়। তাই তিনি বিশেষভাবে মোটা স্ট্র তৈরি করালেন। এভাবেই ১৯৮৬ সালে বিশ্বের প্রথম বোবা মিল্ক টির দোকান 'হানলিন' যাত্রা শুরু করে। বর্তমানে হানলিনের প্রায় ৮০টি শাখা বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে। বাংলাদেশেও বাবল টি কম জনপ্রিয় নয়।

একজন বাবল টি প্রেমী বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী সুপ্রীতি বলেন, 'সারাদিনের ব্যস্ততার শেষে আমার সবচেয়ে প্রিয় পানীয় এটি। বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা জমাতে বা কাজের ফাঁকে বোবা মিল্ক টি দারুণ লাগে।'

১৯৯০-এর দশক থেকে বাবল টি পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় জনপ্রিয় হয়ে ওঠে এবং পরে এটি উত্তর আমেরিকা ও ইউরোপেও ছড়িয়ে পড়ে। বর্তমানে এটি বিভিন্ন স্বাদ, রং ও টপিংসসহ পাওয়া যায়, যা তরুণদের মাঝে অত্যন্ত জনপ্রিয়। ঢাকাতেও এখন বেশ কিছু বাবল টির দোকান গড়ে উঠেছে, যেমন—চামিচি, চা টাইম, কই তে ইত্যাদি। এসব দোকানে ৩০০-৫০০ টাকার মধ্যে বিভিন্ন সাইজ ও ফ্লেভারের বোবা ড্রিংকস পাওয়া যায়।

বাবল টি মূলত তরুণদের কাছে দারুণ গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে। পুরোনো বোবা ড্রিংক প্রেমীরা নিশ্চয়ই ফরমোসা কিউ কিউ টির নাম শুনেছেন। 'ফরমোসা' হচ্ছে তাইওয়ানের আরেক নাম, আর চাইনিজ ভাষায় 'কিউ কিউ' মানে চিবানো যায় এমন। বহু বছর ধরে বাংলাদেশে জনপ্রিয় এই ফরমোসা কিউ কিউ টি পাওয়া যাচ্ছে বিভিন্ন ফলের ফ্লেভারে।

২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানে বীর শহিদ ও অকুতোভয় আন্দোলনকারীদের স্মরণে ও সম্মানে আন্দোলনের প্রেক্ষাপট নিয়ে শাহরিয়ার সোহাগ এর নতুন উপন্যাস বাংলা বসন্ত। অর্ডার করতে ক্লিক করুন

বাবল টি তৈরির প্রক্রিয়া

নামের সঙ্গে 'টি' থাকলেও এটি বানানোর পদ্ধতি সাধারণ চায়ের মতো নয়। এতে চায়ের সঙ্গে ট্যাপিওকা পার্ল ও বরফ মিশিয়ে এক বিশেষ রেসিপিতে তৈরি করা হয় পানীয়টি। সময়ের সঙ্গে বিভিন্ন দেশ ও ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান তাদের সৃজনশীলতা দিয়ে নতুন নতুন ফ্লেভার তৈরি করছে, যা বাবল টিকে আরও বৈচিত্র্যময় করেছে।

শুরুটা তাইওয়ানে হলেও, এই বিশেষ পানীয়ের জনপ্রিয়তার সঙ্গে তাইওয়ানের নাম চিরকাল জড়িয়ে থাকবে। আপনি যদি এখনো এই মজাদার ড্রিংকটির স্বাদ না নিয়ে থাকেন, তাহলে এখনই চেখে দেখুন!

No comments

Powered by Blogger.