১০ বছরে সীমান্তে ৩০৫ বাংলাদেশি নিহত
বাংলাদেশের বিভিন্ন সীমান্তে ২০১৫ সাল থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত ১০ বছরে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ কর্তৃক ৩০৫ জন নিহত হয়েছেন। পাশাাপশি আহত হয়েছেন ২৮২ জন।
সোমবার (১০ মার্চ) এমন তথ্য দিয়েছে মানবাধিকার পর্যবেক্ষণ সংস্থা হিউম্যান রাইটস সাপোর্ট সোসাইটি (এইচআরএসএস)। বাংলাদেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত এ সংক্রান্ত সংবাদ এবং এইচআরএসএস’র সংগৃহীত তথ্য অনুযায়ী এ প্রতিবেদন প্রকাশ করে সংস্থাটি।
প্রতিবেদনে সীমান্তে বিএসএফ কর্তৃক শুধু ২০২৪ সালে ৫৭টি হামলার ঘটনায় ২৬ জন বাংলাদেশি নিহত, ২৫ জন আহত, ৪৭ জন গুলিবিদ্ধ এবং ১৫৮ জনকে গ্রেপ্তারের তথ্য জানায় এইচআরএসএস। একই সময়ে সীমান্তে ৯ জন বাংলাদেশির লাশ পাওয়া গেছে, যারা ভারতীয় নাগরিক ও খাসিয়াদের হামলায় নিহত হওয়ার অভিযোগ রয়েছে। এ ছাড়া ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে ৮ মার্চ পর্যন্ত সীমান্তে বিএসএফ কর্তৃক ১৫টি হামলার ঘটনায় ৪ জন বাংলাদেশি নিহত, ১০ জন আহত, ৫ জন গুলিবিদ্ধ ও ১৫ জন গ্রেপ্তার হয়েছেন। এ সময় সীমান্তে ভারতীয় নাগরিক ও খাসিয়াদের হামলায় ৩ জন বাংলাদেশি নিহত হয়েছেন বলে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, ২০১৫ সালে বাংলাদেশি সীমান্তে বিএসএফ কর্তৃক ৪৩ জন নিহত ও ৫৪ জন আহত হয়েছেন। ২০১৬ সালে ২৮ জন নিহত ২৮ জন আহত হয়েছেন। ২০১৭ সালে ৩০ জন নিহত ৩৭ জন আহত হয়েছেন। ২০১৮ সালে ১৫ জন নিহত ও ১২ জন আহত হন। ২০১৯ সালে ৪২ জন নিহত ২৫ জন আহত হন। ২০২০ সালে ৫১ জন নিহত ২৫ জন আহত হন। ২০২১ সালে ১৭ জন নিহত ১৪ জন আহত হন। ২০২২ সালে ২৩ জন নিহত ৩১ জন আহত হন। ২০২৩ সালে ৩০ জন নিহত ৩১ জন আহত হন। ২০২৪ সালে ২৬ জন নিহত ও ২৫ জন আহত হন।
এইচআরএসএস’র নির্বাহী পরিচালক ইজাজুল ইসলাম স্বাক্ষরিত প্রতিবেদনে বলা হয়, এ সকল ঘটনা সীমান্তের নিরাপত্তার ক্ষেত্রে একটি নাজুক পরিস্থিতি নির্দেশ করে। ভারতের বারবার প্রতিশ্রুতি এবং কূটনৈতিক প্রচেষ্টা সত্বেও এই দুঃখজনক ঘটনাগুলি উদ্বেগজনক হারে বছরের পর বছর ধরে ঘটছে।
এতে আরও বলা হয়, সীমান্তহত্যা বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের অন্যতম স্পর্শকাতর ইস্যু। দুই দেশের সীমান্তে প্রায়ই বাংলাদেশি নাগরিকদের হত্যার ঘটনা ঘটে, যা দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক উত্তেজনা তৈরি করে। বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে অধিকাংশ সময়ই বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বিদ্যমান ছিল যা সাম্প্রতিক সময়ে কিছুটা ভাটা পড়েছে। উভয় সরকারই সীমান্তে বেসামরিক জীবন রক্ষাকে অগ্রাধিকার দেওয়ার কথা বলে আসছে। বিভিন্ন দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে সীমান্তে হত্যাকাণ্ড শূন্যের কোঠায় নিয়ে আসার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হলেও এ ধরনের ঘটনা প্রতিনিয়ত ঘটছে।
এইচআরএসএস উভয় দেশের কর্তৃপক্ষকে এই সংকটের স্থায়ী সমাধানের লক্ষ্যে গঠনমূলক সংলাপ এবং কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণের মধ্য দিয়ে সীমান্তের হত্যাকাণ্ডের সংখ্যা প্রকৃতপক্ষে শূন্যে নিয়ে আসার বিষয়ে আহ্বান জানায়। একই সঙ্গে ফেলানীর হত্যাকাণ্ডের ঘটনাসহ সকল সীমান্ত হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত করে জড়িতদের শাস্তির আওতায় আনার আহবান জানায় এইচআরএসএস।
No comments