Adsterra

রোজা অবস্থায় চুমু দেওয়ার বিধান

রোজা অবস্থায় ঢাকা ভয়েস, Dhaka Voice, Trending News, Viral News, Top News, Hot News, bangla news, bangladesh news

ইসলামে পবিত্র রমজান মাসে রোজা রাখা ফরজ। রোজাদারের জন্য সুবহে সাদিকের সময় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত পানাহার ও স্ত্রী সম্ভোগ থেকে বিরত থাকা কর্তব্য। এ ছাড়া যাবতীয় পাপ কাজ পরিহারের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে রোজাদারকে। 

কিছু বিষয় এমন আছে যেসব কারণে রোজা ভঙ্গ না হলেও তা করা অনুচিত।


কারণ এতে রোজা ভঙ্গ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। যেমন রোজা অবস্থায় স্ত্রীকে চুমু দেওয়া বা আদর-সোহাগ করা। এতে সহবাস বা বীর্যপাতের পরিস্থিতি তৈরি না হলে কোনো সমস্যা নেই। তবে রোজা যেহেতু পানাহার ও যৌনতা থেকে সংযমী হওয়ার মাস, তাই এই মাসে দিনের বেলা রোজাদারদের যৌন উত্তেজক কাজ থেকে বিরত থাকা উচিত।


পক্ষান্তরে গোসল ফরজ হওয়ার মতো পরিস্থিতি তৈরির আশঙ্কা থাকলে এমন কাজ করা মাকরুহ। আর গোসল ফরজ হওয়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি হলে রোজা ভেঙে যাবে। পরবর্তীতে তা কাজা দিতে হবে।


হাদিস শরিফে এসেছে, 


عن عائشة رضي الله عنها قالت: (كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يُقَبِّلُ وَهُوَ صَائِمٌ، وَيُبَاشِرُ وَهُوَ صَائِمٌ، وَلَكِنَّهُ أَمْلَكُكُمْ لِإِرْبِهِ) رواه البخاري


আয়েশা (রা.) বর্ণনা করেছেন, ‘নবী (সা.) রোজা অবস্থায় চুমু দিতেন এবং শরীর স্পর্শ করতেন।


কিন্তু তিনি তাঁর যৌন চাহিদা নিয়ন্ত্রণে তোমাদের চেয়ে বেশি সক্ষম ছিলেন।’ (বুখারি, হাদিস : ১৯২৭), মুসলিম, হাদিস : ১১০৬)

অন্য হাদিসে এসেছে, 


وعن أبي هريرة: أن رجلاً سأل النبي ﷺ عن المباشرة للصائم فرخَّص له، وأتاه آخر فنهاه. هذا الذي رخص له شيخ، والذي نهاه شاب.


আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণনা করেছেন, এক ব্যক্তি রাসুল (সা.)-এর কাছে এসে রোজাদার ব্যক্তির স্ত্রীকে স্পর্শ করা প্রসঙ্গে জিজ্ঞাসা করেন। তখন রাসুল (সা.) তাকে অবকাশের কথা জানালেন। অতঃপর আরেক ব্যক্তি এসে তাঁকে একই বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বারণ করেন। যে ব্যক্তিকে তিনি অবকাশ দিয়েছিলেন তিনি বৃদ্ধ ছিলেন এবং যাকে তিনি বারণ করেছিলেন ওই ব্যক্তি যুবক ছিল।


(আবু দাউদ, হাদিস : ২৩৮৭)

অন্য হাদিসেও যুবক ও বৃদ্ধের ক্ষেত্রে বিধানটির তারতাম্যের বিবরণ বর্ণিত হয়েছে। যেমন- 


 عبد الله بن عمرو بن العاص رضي الله عنهما قال: (كنا عند النبي صلى الله عليه وسلم فجاء شاب فقال: يا رسول الله! أقبل وأنا صائم؟ فقال النبي صلى الله عليه وسلم: لا، فجاء شيخ فقال: أأقبل وأنا صائم؟ فقال: نعم)، قال الراوي (فنظر بعضنا إلى بعض فقال رسول الله صلى الله عليه وسلم: قد علمت لم نظر بعضكم إلى بعض، إن الشيخ يملك نفسه).


হাদিসে এসেছে, আবদুল্লাহ ইবনে আমর ইবনুল আস (রা.) বলেন, ‘আমরা নবী (সা.)-এর কাছে বসা ছিলাম। তখন এক যুবক এলেন এবং জিজ্ঞেস করলেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল, আমি কি রোজা রেখে চুমু খেতে পারি?’ নবী (সা.) বললেন, ‘না।’ এরপর এক বৃদ্ধ এলেন এবং একই প্রশ্ন করলেন। নবী (সা.) বললেন, ‘হ্যাঁ।’ আমরা তখন অবাক হয়ে একে অপরের দিকে তাকাচ্ছিলাম। নবী (সা.) বললেন, ‘আমি জানি, তোমরা কেন একে অপরের দিকে তাকাচ্ছ। শোনো, বৃদ্ধ নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন।’ (মুসনাদে আহমদ: ২ / ১৮০ ও ২৫০)


শায়খ আবদুল আজিজ বিন বাজ (রহ.)-কে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল, পুরুষ যদি রমজান মাসে দিনের বেলা স্ত্রীকে চুম্বন করে বা তাকে আদর-সোহাগ করে, তাহলে কি তার রোজা নষ্ট হবে, নাকি হবে না?


তিনি উত্তরে বলেছিলেন, একজন পুরুষের জন্য রোজা অবস্থায় স্ত্রীকে চুম্বন করা, আদর-সোহাগ করা, সহবাস ছাড়া স্পর্শ করা এসব কিছুই বৈধ। এতে কোনো সমস্যা নেই। কারণ নবী (সা.) রোজা অবস্থায় চুম্বন করতেন, রোজা অবস্থায় স্পর্শ করতেন। কিন্তু কেউ যদি হারামে লিপ্ত হওয়ার আশঙ্কা করে তাহলে তার জন্য চুম্বন করা মাকরুহ। আর যদি সে বীর্যপাত করে ফেলে তাহলে সে দিবসের বাকি সময় সব ধরনের পানাহার থেকে বিরত থাকবে এবং ওই দিনের রোজা পরে কাজা করবে। তবে এর জন্য তাকে কাফফারা দিতে হবে না। এটা অধিকাংশ আলেমের মত। (ফাতাওয়াশ শাইখ ইবনে বাজ, (পৃষ্ঠা : ৩১৫; খণ্ড ১৫)

No comments

Powered by Blogger.