Adsterra

শরীরে কোন ঘটনাগুলো ঘটলে মানুষ হঠাৎ মারা যায়

 

শরীরে কোন ঘটনাগুলো ঘটলে মানুষ হঠাৎ মারা যায়, ঢাকা ভয়েস, Dhaka Voice, Trending News, Viral News, Top News, Hot News, bangla news, bangladesh news

অনেক সময় আমরা শুনি, ‘ওই লোকটা হঠাৎ মারা গেল!’ বা কেউ হয়তো ঘুমের মাঝে ‘হঠাৎ’ মারা যান। এসব মৃত্যুকে আমরা অপ্রত্যাশিত বা হঠাৎ মৃত্যু বলে জানি, তবে চিকিৎসাবিজ্ঞান অনুযায়ী এর কিছু নির্দিষ্ট কারণ আছে।

হঠাৎ মৃত্যুর প্রধান কারণগুলো হলো হৃদরোগ, মস্তিষ্কের সমস্যা, এবং শ্বাসকষ্টের সমস্যা। এসব গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গের ব্যর্থতার কারণে হঠাৎ মৃত্যু ঘটতে পারে। চলুন জেনে নেওয়া যাক হঠাৎ মৃত্যুর বিভিন্ন কারণ এবং এর প্রতিকার সম্পর্কে।


হৃদরোগ

হৃদপিণ্ডের সঠিক কার্যক্রমের জন্য প্রয়োজন সঠিক পরিমাণ রক্ত সরবরাহ। যদি হার্টের রক্তনালী বন্ধ হয়ে যায় এবং অক্সিজেন না পৌঁছায়, তাহলে হার্ট অ্যাটাক হতে পারে। ঢাকার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অধ্যাপক ডা খান আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘হৃদরোগ বা শ্বাসকষ্টের সমস্যা হলে, রোগী মারা যেতে পারে।’ যদি হার্ট অ্যাটাক বা কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হয়, দ্রুত চিকিৎসা না পাওয়া গেলে মৃত্যু হতে পারে। সিপিআর (কার্ডিওপালমোনারি রিসাসিটেশন) দিলে রোগীর বেঁচে থাকার সম্ভাবনা থাকে। হার্ট অ্যাটাকের কিছু লক্ষণ হলো, বুকের মাঝ বরাবর ব্যথা, শ্বাসকষ্ট, কাশি, এবং বমি।


রেস্পিরেটরি ফেইলিউর

আরেকটি সাধারণ কারণ হলো শ্বাসযন্ত্রের ব্যর্থতা। যখন শ্বাসযন্ত্র শরীরে পর্যাপ্ত অক্সিজেন পৌঁছাতে ব্যর্থ হয় অথবা কার্বন ডাইঅক্সাইড সঠিকভাবে বের করতে না পারে, তখন রেস্পিরেটরি ফেইলিউর হয়। এতে শ্বাসকষ্ট, ঠোঁট বা আঙুলের ডগা নীল হয়ে যাওয়া, ক্লান্তি, বিভ্রান্তি, অজ্ঞান হয়ে পড়া, অতিরিক্ত ঘাম, মাথা ব্যথা ইত্যাদি লক্ষণ দেখা দেয়। দ্রুত চিকিৎসা না হলে, এটি প্রাণঘাতী হতে পারে।


পালমোনারি এম্বোলিজম

এটি ফুসফুসে রক্ত জমাট বাঁধার কারণে ঘটে। অনেক সময় কেউ সিজদা করতে গিয়ে হঠাৎ পড়ে গিয়ে মারা যায়, এটি পালমোনারি এম্বোলিজমের উদাহরণ। এতে শ্বাসপ্রশ্বাসের সমস্যা, ঘাম হওয়া, চিন্তা বোধ করা, অজ্ঞান হওয়া ইত্যাদি লক্ষণ থাকে। দ্রুত চিকিৎসা না হলে এটি মৃত্যুর কারণ হতে পারে।


স্ট্রোক

স্ট্রোক মস্তিষ্কে রক্ত সরবরাহ বন্ধ হয়ে কোষগুলো মারা যাওয়ার কারণে হয়। হেমোরেজিক স্ট্রোক বিশেষভাবে হঠাৎ মৃত্যুর কারণ। স্ট্রোকের লক্ষণগুলো হলো, শরীরের একপাশ অবশ হয়ে যাওয়া, চোখে ঝাপসা দেখা, কথা বলতে অসুবিধা হওয়া, তীব্র মাথাব্যথা, মুখ বেঁকে যাওয়া, ভারসাম্য হারানো, বমি হওয়া ইত্যাদি। দ্রুত হাসপাতালে নিলে চিকিৎসা সম্ভব, কিন্তু সময়ক্ষেপণ করলে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।


প্রতিরোধের উপায়

হঠাৎ মৃত্যু প্রতিরোধে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো সুশৃঙ্খল জীবনযাপন। ডা আজাদ বলেন, ‘এই অবস্থাগুলো একবার হলে বার বার হয়, তবে সতর্ক থাকলে কিছুটা হলেও রক্ষা পেতে পারেন।’ সুশৃঙ্খল জীবনধারা, ব্যালেন্সড ডায়েট, নিয়মিত ব্যায়াম, এবং ধূমপান ও মদ্যপান থেকে দূরে থাকা উচিত। শারীরিক পাশাপাশি মানসিক স্বাস্থ্যও সঠিক রাখতে হবে, অর্থাৎ, ইমোশন নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। চিকিৎসকরা মনে করেন, রোগী যদি শুরুর পর্যায়ে চিকিৎসা নেন, তাহলে মৃত্যু ঝুঁকি কমে।

এভাবে সঠিক যত্ন এবং সচেতনতা রক্ষা করে হঠাৎ মৃত্যুর ঝুঁকি অনেকটাই কমানো সম্ভব।



ডা. আবিদা সুলতানা, (এমবিবিএস)
জেনারেল প্রাকটিসার, সিটি হেলথ সার্ভিসেস লিঃ এন্ড সিটি হাসপাতাল লিঃ
মেডিসিন, চর্মরোগ, বাত-ব্যাথা, শিশু ও গাইনী রোগ বিশেষজ্ঞ।
লেকচারার, জেড এইচ সিকদার মেডিকেল কলেজ এন্ড হসপিটাল, ঢাকা।


No comments

Powered by Blogger.