ফিলিস্তিন-ইসরায়েল যুদ্ধ নিয়ে কোরআন-হাদিসের ভবিষ্যদ্বাণী
ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড সমগ্র মুসলিম উম্মাহর আবেগের জায়গা। এর অন্যতম কারণ এখানে রয়েছে ইসলামের তৃতীয় পবিত্রতম মসজিদ আল-আকসা। পবিত্র কোরআনে এর মর্যাদা ঘোষণা করে ইরশাদ হয়েছে, ‘পবিত্র সেই সত্তা, যিনি নিজ বান্দাকে রাতারাতি মসজিদুল হারাম থেকে মসজিদুল আকসায় নিয়ে যান, যার চারপাশকে আমি বরকতময় করেছি...।’ (সুরা বনি ইসরাইল, আয়াত : ১)
ইসলামি দৃষ্টিকোণ থেকে মসজিদে আকসার মাহাত্ম্য অনেক উঁচুতে। এ বিষয়ে কারও কোনো দ্বিমত নেই। এর সংরক্ষণ, পবিত্রতা রক্ষা করা শুধু এখানকার বাসিন্দাদের জন্য নয়; বরং সমগ্র মুসলিম উম্মাহর ওপর আবশ্যক। পবিত্র কোরআন ও হাদিসে বরকতময় এ ভূখণ্ডের গুরুত্ব ও মর্যাদা নিয়ে অসংখ্য বর্ণনা রয়েছে।
আজকের ফিলিস্তিন ও অবৈধ ইসরায়েল রাষ্ট্র যেহেতু কোরআন নাজিলের বহু কাল পর সৃষ্টি হয়েছে, এজন্য কোরআন ও হাদিসে ইসরায়েল কিংবা ফিলিস্তিনের নাম সরাসরি উল্লেখ করা হয়নি; বরং মসজিদুল আকসা ও ইহুদি জাতিকে কেন্দ্র করে ইসলামের প্রধান দু’টি উৎসে আলোচনা এসেছে।
মহানবী (সা.) ইহুদিদের সঙ্গে মুসলিমদের যুদ্ধ নিয়ে ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন। এক হাদিসে রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘কেয়ামত সংগঠিত হবে না যতক্ষণ পর্যন্ত মুসলমানরা ইহুদি সম্প্রদায়ের সঙ্গে লড়াই না করবে। মুসলমানরা তাদেরকে হত্যা করবে। ফলে তারা পাথর বা বৃক্ষের আড়ালে আত্মগোপন করবে। তখন পাথর বা গাছ বলবে— হে মুসলিম, হে আল্লাহর বান্দা! এই তো ইহুদি আমার পেছনে। এসো, তাকে হত্যা কর। কিন্তু ’গারকাদ’ গাছ এ কথা বলবে না। কারণ, এটি হচ্ছে ইহুদিদের গাছ। (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ৭০৭৫)
শুধু ইসরায়েলের বর্তমান ইহুদিরাই নয়; এ অভিশপ্ত জাতিটি পৃথিবীর ইতিহাসের অনেক আগে থেকেই জুলুম-নির্যাতনসহ নানা অপকর্ম করে আসছে। পবিত্র কোরআন ঘোষণা করেছে, ইহুদিরা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারী জাতি। ‘যখনই তারা যুদ্ধের আগুন জ্বালায়, আল্লাহ তা নিভিয়ে দেন এবং তারা জমিনে ফিতনা ফাসাদ ও গোলযোগ সৃষ্টির চেষ্টা চালায়। আল্লাহ বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারীদের ভালোবাসেন না।’ (সুরা মায়েদা, আয়াত : ৬৪) ‘ আল্লাহ তায়ালা অন্যত্র বলেন,‘... তারা ছিল নাফরমান ও সীমালঙ্ঘনকারী।’ (সুরা বাকারা, আয়াত : ৬১) হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) সূত্রে বর্ণিত, ইহুদি জাতি অন্তত ৩০০ নবীকে হত্যা করেছে। (তাফসিরে ইবনে আবি হাতেম: ১/১২৬)
তবে এত দুঃর্দশার পরও আমাদের জন্য সুখবর হলো- রাসুল (সা.)-এর ভবিষ্যদ্বাণী অনুযায়ী, কেয়ামতের আগে অবশ্যই ইহুদি জাতি ফিলিস্তিনি মুসলিমদের কাছে পরাস্ত হবে। রাসুল (সা.) বলেন, ‘আমার উম্মতের একটি দল সত্যের ওপর বিজয়ী থাকবে। শত্রুর মনে পরাক্রমশালী থাকবে। দুর্ভিক্ষ ছাড়া কোনো বিরোধী পক্ষ তাদের কিছুই করতে পারবে না। আল্লাহর আদেশ তথা কেয়ামত পর্যন্ত তারা এমনই থাকবে। সাহাবায়ে কেরাম জিজ্ঞাসা করলেন, হে আল্লাহর রাসুল, তারা কোথায় থাকবেন? রাসুল (সা.) বললেন, ‘তারা আল আকসা এবং তার আশপাশে থাকবে।’ (মুসনাদে আহমদ, হাদিস : ২১২৮৬)
No comments